স্ত্রীকে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া কাপুরুষের লক্ষন নয়। কুরআন ও হাদিসের কথা।

কুরআন ও হাদিসের কথা : স্ত্রীকে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া কাপুরুষের লক্ষন নয়। বরং সেই সকল পুরুষের হাতে চুড়ি পড়া উচিৎ যারা নিজের স্ত্রীর অধিকার আদায় করতে ভয় পায়। এবং কেও কারো কর্তব্য পালন করতে দেখে বিদ্রুপ করে।
***********************************
সাফিয়্যা (রা.) ছিলেন, নবীজির অন্যতম স্ত্রী। তিনি কিছুটা খাটো ছিলেন, ফলে উটের পীঠে আরোহন করতে কষ্ট হতো। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে সাহায্য করার জন্যে নিজের হাঁটু পেতে দিতেন। সাফিয়্যা (রা.) সেই হাঁটুতে পা রেখে উটের হাওদায় ওঠে বসতেন [সহিহ বুখারি: ৪২১১]
.
আম্মাজান সাফিয়্যা (রা.) বলেন, ‘একবার রাসূল ﷺ তাঁর স্ত্রীদের সাথে হজ্বে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আমার উট বসে পড়ল, কারণ ওটা ছিল সবচেয়ে দুর্বল উট, তাই আমি কেঁদে ফেললাম। নবী ﷺ আমার কাছে আসলেন আর আমার চোখের জল নিজের জামা ও হাত দিয়ে মুছে দিলেন।’ [মুসনাদে আহমাদ: ৬/৩৩৭]
.
সুবহানাল্লাহ! পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষটি তাঁর স্ত্রীর সাহায্যে নিজের হাঁটু বিছিয়ে দেন আর সেই হাঁটুতে পা দিয়ে ভর করে স্ত্রী উটের পীঠে চড়েন! কী অসাধারণ দৃশ্য! কী চমৎকার বিনয় ও ভালবাসা! আবার স্ত্রীর চোখের পানি নিজের জামা ও হাত দিয়ে পরম মমতায় মুছে দেন। অন্য হাদিসে এসেছে, তিনি উঠের পীঠে তন্দ্রালু হয়ে পড়তেন, তখন নবীজি তাঁর মাথা ধরে রাখতেন! একজন স্ত্রী তাঁর স্বামীর কাছ থেকে আর কী চায়?
.
একজন স্ত্রী হিসেবে সাফিয়্যা (রা.) নিজ স্বামী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কীভাবে মূল্যায়ন করতেন? কতটুকু ভালবাসতেন? এটি বুঝতে একটি হাদিসই যথেষ্ট হতে পারে।
.
হাদিসে এসেছে, ‘রাসূল ﷺ যখন প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে মৃত্যুশয্যায় ছিলেন, তাঁর স্ত্রীরা তাঁর চারপাশে জড়ো হলেন। তখন সাফিয়্যা (রা.) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর শপথ! আপনার জায়গায় যদি আমি থাকতে পারতাম!’ (অর্থাৎ, আপনার কষ্টটা আপনার না হয়ে যদি আমার হতো!) তাঁর কথা শুনে অন্য স্ত্রীগণ মুখটিপে হাসলেন। রাসূল ﷺ তাঁদের দেখে ফেললেন এবং বললেন, ‘তোমাদের মুখ ধুয়ে ফেল।’ তাঁরা বলল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! কেন?’ তিনি জবাবে বললেন,‘কারণ তোমরা তাঁকে বিদ্রুপ করেছ। আল্লাহর শপথ! সে সত্য বলছে।’ [তবাকাতে ইবনে সা’দ: ৮/১০১]
.
জ্বী, এটিই বাস্তবতা। জ্ঞানীরা বলেন, নারীকে আপনি যেটুকু ভালবাসা ও সম্মান দিবেন, সে বিনিময়ে তারচেয়ে বেশি ভালবাসা ও সম্মান ফিরিয়ে দেবে। আবার তাকে যতটুকু ঘৃণা দেখাবেন, বিনিময়ে সে তারচেয়েও বেশি ঘৃণা ফিরিয়ে দেবে।
(যাহোক, এটা কোনো চিরন্তন সত্য বা ওহির বাণী নয়, আপনারা এতে দ্বিমত করতেই পারেন। আমরা প্রাসঙ্গিক হিসেবে এটি উল্লেখ করলাম মাত্র।)
.
মূলকথা হলো, স্ত্রীকে ভালবাসা ও সম্মান দিন। তাকে রানির মত ট্রিট করুন। সে আপনাকে রাজার মত ট্রিট করবে, আপনাকে সম্মান করবে, ভালবাসবে। যেমনটি আমরা দেখেছি সাফিয়্যা (রা.) ও নবীজির জীবনে,
কুরআন ও হাদিসের কথা ✔️

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *