করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ দেড় বছর পর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রথম অবস্থায় পঞ্চম শ্রেণি, এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন এবং অন্য শ্রেণিগুলোকে সপ্তাহে একদিন করে ক্লাসে নেওয়া হচ্ছে।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) ক্লাস শুরুর প্রথম দিন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ক্যাম্পাসে আসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এদিন ৮০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন শাখা থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
শাখা পরিচালক অধ্যাপক আমির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সারাদেশে ১৯ হাজার অনুমোদিত স্কুল-কলেজ থেকে প্রতিদিনের তথ্য প্রতিদিন পাঠাচ্ছে। বিকেল ৩টার মধ্যে ছক আকারে এসব তথ্য মেইলে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে মোতাবেক রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১৪ হাজার ৪৮৮টি বিদ্যালয় থেকে প্রথম দিনের সার্বিক তথ্য পাঠানো হয়েছে। প্রথম দিন সারাদেশে সব বিদ্যালয়ে প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত ছিল।
এদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠদান চলছে। এরইমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) জুড়ে দেয়া বিভিন্ন নির্দেশনা অনুসরণ করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করে। ছাত্রছাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে সারিবদ্ধভাবে তাদের প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে এক বেঞ্চে একজন করে জেড আকারে বসানো হয় শিক্ষার্থীদের। অনেক স্থানে সাত ফুটের বেঞ্চে দুজন করে বসানো হয়। সীমিত আকারে কয়েকটি স্তরে ধাপে ধাপে ক্লাস নেওয়া হয়। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গেটে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সন্তানকে স্কুলে পৌঁছে দিতে অনেক অভিভাবক প্রবেশ পথের গেটে ভিড় জমান। সেসব স্থানে স্বাস্থ্যবিধিও কিছুটা ঢিলেঢালা দেখা যায়।
জানা গেছে, রাজধানীর কবি কাজী নজরুল সরকারি কলেজে রোববার বিভিন্ন পর্যায়ে ১ হাজার ৬০৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৩১৮ জন উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিতির এ হার ৮২ দশমিক ৬ শতাংশ। আর ১১৫ জন শিক্ষকের মধ্যে এদিন উপস্থিত ছিলেন ১১৩ জন। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে প্রথম শ্রেণির ৩৭৯ জনের মধ্যে ৩১১ জন উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিতির হার ৮২ শতাংশ। ১০ম শ্রেণির ৪১৫ জনের মধ্যে ৩৪৩ জন উপস্থিত ছিল, উপস্থিতির হার ৮২ শতাংশ ৬৫ শতাংশ। এদিন স্কুলটির মোট ১৪৯ জন শিক্ষকের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন মাত্র একজন।
এ বিষয়ে অধ্যাপক আমির হোসেন বলেন, সরকারি স্কুল-কলেজ ও বেসরকারি শীর্ষ মানের স্কুল-কলেজে প্রথশ দিন শিক্ষার্থী উপস্থিতি অনেক বেশি। আমাদের প্রত্যাশার চাইতেও বেশি শিক্ষার্থী প্রথম দিন ক্লাসে উপস্থিত হয়েছে। যারা আসেনি, তিন দিন পেরিয়ে গেলে তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বেসরকারি ছোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কিছুটা কম দেখা গেছে। অনেকে গ্রামের বাড়িতে, অসুস্থ কিংবা ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে প্রথম দিন অনুপস্থিত ছিল। ধীরে ধীরে শিক্ষার্থী উপস্থিতি বাড়বে বলে জানান তিনি।