ফিতরা দেওয়ার নিয়ম : টাকা দিয়ে ফিতরা চলে না, চলবে না (গ্রহণীয় হবে না, অন্তত নবিজীর তরিকায় হবে না!!!)
রাসুল (সাঃ) এর যুগেও অর্থ/টাকা/পয়সা ছিলো, কিন্তু সে সময় টাকা না দিয়ে খাদ্য দ্রব্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা হত এবং খাদ্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা ফরজ করা হয়েছে…।
হাদিসের কলম থেকে—-
১। সহীহুল বুখারী :: হাদিস : ১৫১০
আমরা নবী (ﷺ)-এর যুগে ঈদের দিন এক সা’ পরিমাণ খাদ্য সাদকাতুল ফিতর হিসাবে আদায় করতাম।
আবূ সা’ঈদ (রাযিঃ) বলেন, আমাদের খাদ্যদ্রব্য ছিল যব, কিসমিস, পনির ও খেজুর।
***বিঃদ্রঃ এক ‘সা’ = ২.৫ কে.জি ,কোনো কোনো আলেম গন বলে থাকেন ৩ কে.জি (সা হল- খাদ্য ওজন পরিমাপক পাত্র)
অসুবিধা নেই আপনি ২.৫ কেজির হিসাবে অথবা ৩ কেজির হিসাবে ফেতরা দিতে পারেন কারন এ দুটোই আলেমদের কথা। কিন্তু সন্দেহ থাকলে বেশিটা দেয়াই উত্তম!
( বুখারীঃ তা.পা ১৫০৫) ( আ.প্র. ১৪১৩, ই.ফা. ১৪১৯)
( বুখারীঃ তা.পা ১৫০৩) ( আ.প্র. ১৪০৭, ই.ফা. ১৪১৩)
২। ঈদুল ফিতরের সলাতের জন্য বের হবার পূর্বেই ফিতরা বন্টন শেষ করতে হবে। ইবনু আব্বাস হতে বর্ণিত যাকাতুল ফিতর যে সলাতের পূর্বে আদায় করবে সেটা মাকবূল বা গ্রহণযোগ্য ।
টাকা দিয়ে চলবে না—- কারণ=
ধরুন ফিতরা ধার্য করা হল ৬৫টাকা (সম্ভবত এরুপ ধার্য করা হয়েছে)
উদাহরন সরূপ ধরা যাক আপনি চাল খান ৩৫ টাকার সে হিসেবে ২.৫ কেজি চালের মূল্য (৩৫x২.৫)= ৮৭.৫ টাকা (আপনার ফিতরা হাদীস অনুযায়ী ৮৭.৫টাকা)
আরেক ভাই চাল খায় ৪৫টাকার সে হিসেবে ২.৫কেজি চালের মূল্য *৪৫x২.৫ )= ১১২.৫টাকা(ভাইয়ের ফিতরা হাদীস অনুযায়ী ১১২.৫টাকা)
এখানে, আপনার কাছ থেকে (টাকা হিসেবে) সুবিধা করে ৮৭.৫৳ এর জায়গায় মাত্র ৬৫ টাকা ধার্য করা হল।
এক্ষেত্রে আপনি ফিতরা প্রাপ্ত ব্যক্তিকে ঠকাচ্ছেন (৮৭.৫-৬৫৳)= ২২.৫ ৳ (এজন্য আল্লাহ আপনাকে পাকরাও করবেন না???)
এক্ষেত্রে, সেই ভাই ফিতরা প্রাপ্ত ব্যক্তিকে ঠকাচ্ছেন (১১২.৫-৬৫৳)= ৪৭.৫ ৳ (এজন্য আল্লাহ তাকে পাকরাও করবেন না???)
এবার আসি আসল হিসাবে(আমি চাল খাই ৫২টাকার) আমার কাছ থেকে (টাকা হিসেবে) ফিতরা নিচ্ছে ৬৫ টাকা।
তাহলে আমার ফেতরা হবে: ৫২× ২.৫= ১৩০ ৳ ।
অথবা ৩ কেজির হিসাব করি: ৫২× ৩= ১৫৬ ৳ ।
এক্ষেত্রে, আমি ফিতরা প্রাপ্ত ব্যক্তিকে ঠকাচ্ছি
(১৩০- ৬৫৳)= ৬৫ ৳ অথবা
( ১৫৬-৬৫৳)= ৯১ ৳ !
ইননালিললাহ! এজন্য আল্লাহ তা’আলা আমাকেও কি পাকরাও করবেন না???
৩। পরিবারের সদস্য সংখ্যা (যেমন-) ৪ জন, তাহলে যে খাদ্য (চাল) খান তার ২.৫ কেজি ধরলে হিসেবে মোট ১০কেজি চাল ফিতরা দিতে হবে।
ফেতরা হলো একধরনের সাদকাহ এর মতো, কিসের সাদকাহ? আমাদের রোজার সদকাহ! আমরা কি সবাই বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবো যে আমাদের রোজা সবার ১০০% কবুল হবে? না পারি না কারন আমরা শুধুই চেষ্টা করতে পারি, আল্লাহ তা’আলার কাছে চাইতে পারি, আর কবুলের মালিক শুধুমাত্র আল্লাহ সুবহানহু ওয়া তা’আলা। তাই আল্লাহ পাক দয়া করে এই ফিতরার বিধান করে দিয়েছেন যাতে গরীব মানুষ কে দান করার মাধ্যমে, সদকাহ করার মাধ্যমে আমাদের রোজার কমতি গুলো পূরন হয়ে যায়!
সুবহান আল্লাহ, আল্লাহ তাঁর বান্দাহ দের কতো ভালোবাসেন! তাই আমাদেরও উচিত এই সুযোগ সঠিক ভাবে কাজে লাগানোর!
***সবসময়ই মনে রাখবেন আমাদের প্রিয় নবিজী, প্রানের নবিজী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) টাকা দিয়ে ফিতরা দেন নি- এখন আমি আপনি আবার কে হই এ বিধান বদলানোর???****