সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা
সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও কিসমিসের উপকারিতা ব্যপক। কিসমিসে আছে বোরন নামক খনিজ যা নারী ও পুরুষ উভয়ের যৌন স্বাস্থ্যের সাথে যুক্ত হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে। সেক্স বৃদ্ধি করার জন্য প্রতিদিন ৩০ থেকে চল্লিশটি কিসমিস রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে পানিসহ কিসমিস গুলো খেয়ে নিন ।
কিসমিস কীভাবে তৈরি হয়?
আঙুরকে শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করা হয়। যেকোন এক জাতের আঙুর নিন।এরপর আঙুরের চেয়ে বেশি পানি নিয়ে ফুটান। এবার ফুটন্ত পানিতে আঙুরগুলোকে ধুয়ে ছেড়ে দিন।কিছুক্ষণ সিদ্ধ করার পর আঙুরগুলোকে তুলে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার সিদ্ধ করা পানি ঝরানো আঙুর রোদে শুকান। প্রায় তিন সপ্তাহ রোদে শুকিয়ে এর ভেতরের আর্দ্রতা পুরোপুরি চলে গেলে একদম পারফেক্ট কিসমিস তৈরি হয়ে যাবে।
কিসমিসের প্রকারভেদ
আসলে আঙুরের জাতের উপরই কিসমিসের প্রকারভেদ নির্ভর করে। তো তিনটি প্রকারের কথা বলছি।যথা ১) বাদামি কিসমিস ২) বেদানা কিসমিস ৩) সুলতানা কিসমিস।
Google News Circular News24
বাদামি কিসমিস:
এই বাদামি কিসমিস তৈরি করতে তিন সপ্তাহ ধরে আঙুর শুকাতে হয়। শুকানোর পরে এগুলি বাদামি হয়ে যায় বলে এটিকে বাদামি কিসমিস বলে।
সুলতানা কিসমিস:
সুলতানা নামের আঙুর যা বীজহীন সবুজ ও গোলাকার হয়। এই আঙুর শুকিয়ে সুলতানা কিসমিস তৈরি করা হয়। এই ধরনের কিসমিস তৈরিতে আঙুরকে শুকানোর আগে এক ধরনের তৈলাক্ত দ্রবণে ভিজিয়ে রাখা হয়। এই কারনে এ সুলতানা কিসমিসের রঙ সোনালি বা হালকা বাদামি।
এই শীতে শরীর গরম রাখে যেসব খাবার -যেসব খাবার শীতে উষ্ণতা জোগাবে
বেদানা কিসমিস:
এটি কালো আঙুর থেকে তৈরি হয় বলে এ কিসমিস দেখতে কিছুটা কালো এবং একে বেদানা কিসমিস বলে। এগুলোর স্বাদ টক-মিষ্টি এবং আকারে ছোট।
কিসমিসের উপকারিতা এবং অপকারিতা
কিসমিসের উপকারিতা এবং অপকারিতা নিয়ে জানার আগে কিসমিস কত ধরনের ও কীভাবে বানানো হয় তা জানব।
কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
কিসমিসের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। নিচে আলোচনা করা হলো।
রক্তশূন্যতা দূরীভূত:
মানবদেহে আয়রনের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। কিসমিস আয়রনের একটি সমৃদ্ধ উৎস।তাই শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিলে আয়রনের ঘাটতি পুরনো কিসমিস খাওয়া উচিত।
হার্টের সুস্থতায়:
হৃদরোগ এড়াতে বা হার্টকে সুস্থ রাখতে কিসমিস অনেক উপকারি।কিসমিস খারাপ কোলেস্টোরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড (রক্তে উপস্থিত এক ধরনের চর্বি) কমাতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
ক্যান্সার প্রতিরোধে:
কিসমিস ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধী থেকে রক্ষা করে।NCBI-এর একটি গবেষণা অনুযায়ী, কিসমিসে অ্যান্টি-র্যাডিক্যাল এবং ক্যান্সার প্রতিরোধক কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে অনেকটা সহায়ক হতে পারে।তবে এটা জেনে রাখা ভালো যে কিসমিস শুধুমাত্র ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে,ক্যান্সার সারাতে পারে না। তাই ক্যান্সারে আক্রান্ত না হওয়ার ক্ষেত্রে কিসমিস ভুমিকা রাখে।
অ্যাসিডিটিতে উপকারী:
অ্যাসিডিটি একটি সাধারণ ও নৈমিত্তিক শারীরিক সমস্যা, যাতে বুক থেকে পেট পর্যন্ত জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়। অ্যাসিডিটি থেকে পরিত্রাণ পেতে কিসমিসের উপকার করে থাকে। পেটের অম্লতা কমাতে কোন খাবারে কিসমিস মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া কিসমিসে ক্ষারীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা মানবশরীরে অ্যাসিডের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
শক্তির উৎস:
শরীরে শক্তি উতপাদনপর জন্য কার্বোহাইড্রেট দরকার।আর কিসমিস হলো কার্বোহাইড্রেটের প্রাকৃতিক উৎস।কিসমিস ব্যায়ামের সময় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বজায় রাখতে পারে, যার ফলে শরীরে শক্তির প্রবাহ বজায় থাকে।
মুখ ও দাঁতের যত্নে:
কিসমিস আমাদের মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি।গবেষকদের মতে, কিসমিসে রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ওলিয়ানোলিক অ্যাসিড, যা দাঁতের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে। এছাড়াও কিসমিসে বিদ্যমান ফাইটোকেমিক্যালগুলি মুখের মধ্যে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে:
ওজন নিয়ন্ত্রণেও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে।যদিও তা সামান্য।আসলে কিসমিসে ডায়েটারি ফাইবার ও প্রিবায়োটিক রয়েছে যা আমাদের অন্ত্রের জন্য ভাল এবং স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া তৈরি করতে সাহায্য করে।আর এগুলো ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে:
কিসমিস খেতে মিষ্টি বিধায় অনেকেই ভাবেন যে ডায়াবেটিসে রোগিরা কিসমিস খেতে পারবেন না।কিন্তু একথা ঠিক নয়।বরং সীমিত পরিমাণে কিসমিস খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কিসমিসে আছে কম গ্লাইসেমিক সূচক।যার কারণে এটি ইনসুলিন প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে।
সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা:
যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও কিসমিসের উপকারিতা ব্যপক। কিসমিসে আছে বোরন নামক খনিজ যা নারী ও পুরুষ উভয়ের যৌন স্বাস্থ্যের সাথে যুক্ত হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নে:
ত্বকের যত্নেও রয়েছে কিসমিসের উপকারিতা।গবেষণায় দেখা যায়,আঙুর এবং আঙুর জাতীয় পণ্যগুলিতে কেমোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধে কিছুটা সাহায্য করতে পারে।এছাড়া কিসমিস ত্বক টোনার হিসেবেও কাজ করে।
কিসমিসের অপকারিতা
কিসমিসের যেমন অনেক উপকারিতা আছে তেমনি এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে।প্রয়োজনের অধিক পরিমাণে খেলে নিম্নলিখিত শারীরিক সমস্যা হতে পারে।যেমন-
শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে,এলার্জি হতে পারে,ডায়রিয়া এবং গ্যাসট্রিক, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
কিসমিস খাওয়ার নিয়ম
কিসমিস খালি খাওয়া যায়। আবার পিনাট বাটার এবং ফ্রুট সালাদের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।এছাড়া আমাদের দেশে মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন জর্দা, পায়েস,সেমাই রান্না করলে কিসমিস দেয়া হয়।ফ্রুটস সালাদে কিসমিস খাওয়া যেতে পারে।আবার সকালের নাস্তায় ওটসে চিনির পরিবর্তে কিসমিস ব্যবহার করুন।ফ্রুটস কেক বানালে তাতে কিসমিস ব্যবহার করলে সুস্বাদু হয়।শুকনো কিসমিস ফল একদিনে 50-100 গ্রাম খাওয়া যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিসমিস গ্রহনের পরিমাণ তাদের খাদ্য এবং ওষুধ অনুসারে হতে হবে।