কলার যত গুণ
কলার যত গুণ বাজারে যে ফলগুলো বারোমাস পাওয়া যায়, তার ভেতরে কলা উল্লেখযোগ্য। কলা যেমন পুষ্টিকর, তেমনই সুস্বাদু। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল বলা হয়। এতে শর্করা, আমিষ, ভিটামিন ও খনিজ লবণের সমন্বয় রয়েছে। কলায় শর্করা, সামান্য আমিষ, কিঞ্চিত ফ্যাট, পর্যাপ্ত খনিজ লবণ ও যথেষ্ট আঁশ আছে।
খনিজ লবণের মধ্যে আছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও লৌহ। এতে ভিটামিন এ, বি ও কিছু ভিটামিন-সি আছে। নিয়মিত কলা খেলে দেহের নানা ঘাটতি পূরণ করে আমাদের সুস্থ থাকায় সহায়ক হবে। তাই তো কলা ‘সুপারফুড’ হিসেবে বিবেচিত।
কলা হজমস্বাস্থ্যের উন্নতি করে : কলা হজমে সাহায্য করে। অ্যাসিডিটি বা গ্রাস্টিক আলসারের রোগীরা কলা খেতে পারেন। পাকা নরম কলা অ্যাসিডিটি নিরাময়ে সক্ষম। পাকস্থলীর আবরণীতে নরম কলার প্রলেপ আলসারের অস্বস্তি কমায়। অ্যাসিডিটির জন্য বুক জ্বালা কমাতেও কলা সহায়ক। কলা যেমন কোষ্টকাঠিন্য দূর করে, তেমনি পাতলা পায়খানায়ও উপকারী।
হৃদরোগ ও স্ট্রোক থেকে বাঁচতে : হৃদরোগ থেকে মুক্ত থাকার জন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এজন্য দেহে পটাশিয়ামের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও দেহে পটাসিয়ামের আদর্শ উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেলে কমে যায় স্ট্রোকের ঝুঁকিও। আর এই উপকারী পটাশিয়াম কলায় আছে প্রচুর পরিমাণে। আঁশযুক্ত খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে। কলায় আঁশ থাকায় তা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সক্ষম।
ত্বকের সুস্থতায় : একটি মাঝারি আকারের কলায় যে পরিমাণ ম্যাঙ্গানিজ আছে, তা আমাদের দৈনিক ম্যাঙ্গানিজের চাহিদার ১৩ শতাংশ পূরণ করে থাকে। এটি ত্বকের কোলাজেন গঠনে সহায়তা করে এবং ত্বক ও অন্যান্য কোষকে ফ্রি র্যাডিকেলজনিত ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
কিডনিস্বাস্থ্যের জন্য কলা : কলার পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কিডনির কার্যক্ষমতা ঠিক রাখে। যে সপ্তাহে ২–৩টি কলা খায়, তাদের কিডনির রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম। আবার যারা সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিন কলা খায়, তাদের কিডনির অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা, যারা কলা না খায় তাদের থেকে ৫০ শতাংশ কম।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে : অনেকেই মনে করেন, কলা খেলে ওজন বাড়ে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে খাদ্যতালিকা থেকে এই ফলটি বাদ দিয়ে দেন। এটা মোটেও ঠিক নয়। সকালে একটি কলা শরীরে চর্বি কমাতে সাহায্য করে। কলায় কোলিনসহ সব ধরনের ভিটামিন বি আছে। যা শরীরে চর্বি জমতে বাধা দেয়। পেটের মেদ কমাতে নিয়মিত সকালে কলা খেতে পারেন।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে : কলার মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম এবং সামান্য লবণ আমাদের হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
সুগার নিয়ন্ত্রণ : প্রতিদিন শারীরিক অনুশীলনের পাশাপাশি কলা খেলে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এটি আপনার দেহের রক্তে শর্করার পরিমান ঠিক রাখবে এবং তার সাথে ব্লাড সুগারও নিয়ন্ত্রন করবে।
রক্তস্বল্পতা দূর করতে : কলাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে। ফলে নিয়মিত কলা খেলে দেহের রক্ত শূন্যতা দূর হয়ে যায়।
এনার্জির উৎস : কলা দেহের এনার্জি বৃদ্ধি করে থাকে। কলাতে প্রচুর পরিমাণের ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন, মিনারেল আছে যা দেহের এনার্জি লেভেল ঠিক রেখে শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। প্রতিদিন নাস্তায় কলা রাখলে তা সারাদিনের কাজে এনার্জি দেবে।