হাদীসের গল্প রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর একজন ছাহাবী ছিলেন, যার নাম ছিল জুলায়বীব (রাঃ)। তিনি ছিলেন উচ্চতায় অনেক ছোট।
আনাস (রাঃ) বলেন, তিনি দেখতে কুশ্রীও ছিলেন। রাসূল (ছাঃ) তাকে বিবাহ করার কথা বললে তিনি নিজের কুশ্রী চেহারার দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, বিবাহের ক্ষেত্রে তো আমি অচল বা চাহিদাহীন। রাসূল (ছাঃ) বললেন, হ’তে পারে, তবে আল্লাহর নিকটে তুমি অচল নও।
রাসূল (ছাঃ) জুলায়বীবের কথা চিন্তা করে একদিন এক আনছারীর কাছে গিয়ে বললেন, ‘আমি তোমার মেয়েকে বিয়ে দিতে চাই’। আনছার লোকটা খুবই খুশী হয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! এতো খুবই বিস্ময়কর, সম্মান, আনন্দ ও আমার চক্ষু শীতলকারী খবর। রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘আমি ওকে নিজের জন্য চাই না’। লোকটি (কিছুটা হতাশ হয়ে) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! তাহ’লে কার জন্য? তিনি বললেন, ‘জুলায়বীবের জন্য’। এ কথা শুনে আনছার মনে একটা ধাক্কা খেলেন এবং নিচু গলায় বললেন, আমি এ ব্যাপারে মেয়ের মায়ের সাথে পরামর্শ করব। এই বলে লোকটি তার স্ত্রীর কাছে চলে গেলেন এবং সব খুলে বললেন। স্ত্রী তার মতই রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক জুলায়বীবের সাথে মেয়ের বিবাহের প্রস্তাব শুনে স্তব্ধ হয়ে বললেন, জুলায়বীবের সাথে! না, কখনোই নয়। আল্লাহর শপথ! আমরা তাকে (নিজ মেয়েকে) তার (জুলায়বীবের) সাথে বিয়ে দেব না। তখন সেই আনছারী তার স্ত্রীর অমতের কথা রাসূল (ছাঃ)-কে জানাতে যাওয়ার জন্য উদ্যত হ’লেন। কিন্তু তার মেয়ে যে কি-না আড়াল থেকে সব শুনছিল। সে এসে জিজ্ঞেস করল, তোমাদেরকে আমার বিয়ের ব্যাপারে কে প্রস্তাব দিয়েছেন? উত্তরে মা তাকে বললেন, রাসূল (ছাঃ) তাকে জুলায়বীবের সাথে বিয়ে দিতে অনুরোধ করেছেন।
যখন মেয়েটি শুনল যে, প্রস্তাবটি রাসূল (ছাঃ)-এর পক্ষ থেকে এসেছে এবং তার মা সেটা প্রত্যাখ্যান করছেন, তখন সে দৃঢ়চিত্তে নিয়ে বলল, তোমরা কি আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছ? আমাকে তাঁর কাছে নিয়ে যাও, তিনি নিশ্চয়ই আমার জন্য ধ্বংস ডেকে আনবেন না।
অন্য বর্ণনায় এসেছে, মেয়েটি বলল, আমি এ ব্যাপারে রাযী হ’লাম এবং রাসূল (ছাঃ)-এর সম্মতির প্রতি আত্মসমর্পণ করলাম। তারপর সে মা-বাবাকে কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতটি শুনিয়ে দিল ‘আর কোন মুমিন পুরুষ বা নারীর জন্য উচিত নয় যে, যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তখন সে ব্যাপারে তাদের কোন মতামত থাকে। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে, সে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিমজ্জিত হয়েছে’ (আহযাব ৩৬)। অতঃপর তার পিতা মেয়েকে সাথে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দরবারে গিয়ে তার মেয়ের দৃঢ়তার কথা জানালেন এবং বললেন, আমার মেয়ের জন্য যেটা ভাল মনে করেন সেটাই করুন। মেয়েটির মতামত শুনে রাসূল (ছাঃ) তাঁর জন্য দো‘আ করলেন,اللَّهُمَّ صُبَّ عَلَيْهَا الْخَيْرَ صبًّا وَلاَ تَجْعَلْ عَيْشَهَا كَدًّا كَدًّا ‘হে আল্লাহ! তুমি তার প্রতি কল্যাণ নাযিল কর এবং তার সংসার জীবন কষ্টদায়ক কর না’। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) জুলায়বীবের সাথে তার বিবাহ সম্পাদন করলেন। ()(( সবাই বুজতে চেষ্টা করবেন ইনশা আল্লাহ ))()