ডিজিটাল বাংলাদেশে আইটিতে ক্যারিয়ার গড়া আজকাল অনেক সহজ হয়ে গেছে যার ফলে সবাই ফ্রিলেন্সিং, ওয়েব-ডেভেলপমেন্ট, সফ্টওয়ার ডেভেলপমেন্ট এর মত বড় বড় ক্ষেএ গুলোতে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য বেশি ঝুকছে। কিন্তু এই রকম আরও অনেক বড় বড় এবং সম্মান জনক ক্যারিয়ারে গড়ার ক্ষেএ আছে যেগুলো সম্পর্কে সাধারণ মানুষ এখনো অজ্ঞাত বা অনেকে আংশিক জানলেও ভাল করে জানার সুযোগ পাচ্ছেন না। তাই আজ আমি এমনই একটি সেক্টর নিয়ে কথা বলব, সেটা হচ্ছে ভিডিও ইডিটিং।যেকোন ক্যারিয়ারের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পূর্বে সেই সেক্টরের কাজের ক্ষেত্রগুলো সবার প্রথমে জেনে নিতে হয়। তাহলে চলোন ভিডিও ইডিটিং সেক্টরের কাজের ক্ষেএ গুলো সম্পর্কে জেনে নেই এবং ভিডিও অ্যাডিটিং জানার জন্য যে যে সফটওয়্যারগুলো শিখতে হবে।
সফটওয়্যারঃ Adobe Premiere, After effects, Final cut pro (FCP), Sound Forge
মিডিয়া হাউজঃ
আমরা টেলিভিশনে যেসব বিজ্ঞাপন দেখি এবং প্রত্যেক অনুষ্ঠানের আগে যে এনিম্যাশন ইনট্রো ভিডিও দেখি ওই গুলা কে বা কারা তৈরি করে দেয় জানেন? সেগুলো তৈরি হয় বিভিন্ন মিডিয়া হাউজ কিংবা অ্যাডফার্মের মধ্যে। টেলিভিশন চ্যানেল বৃদ্ধির সাথে সাথে এধরনের প্রতিষ্ঠান ও গড়ে উঠছে প্রচুর পরিমানে। এজন্য ভিডিও এডিটিং জানা লোকবলের ও বেশি প্রয়োজন পড়ছে। যারা ভাল ভিডিও ইডিটিং জানেন এসবপ্রতিষ্ঠানে তারা কাজের সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে খুব সহজেই। টিভিতে সংবাদ, টকশো বাদে বেশিরভাগ অনুষ্ঠান এসব মিডিয়া হাউজ থেকে তৈরি হয়। কতটা টিভি চ্যানেল আছে, সেগুলোতে নিয়মিত কত অনুষ্ঠান চলে, মনে মনে একবার সেগুলোকে নিয়ে ক্যালকুলেশন করলেই খুব সহজে বোঝা যায়, ভিডিও ইডিটরদের চাহিদা কেমন? এসব জায়গাগুলোতেও সম্মানজনক বেতনে চাকুরীর সুযোগ রয়েছে।
টেলিভিশন চ্যানেলে চাকুরীঃ
ভিডিও এডিটিংয়ের প্রধান কাজের ক্ষেত্র হচ্ছে, টেলিভিশন চ্যানেল গুলোতে। বাংলাদেশে এ মুহুর্তে প্রায় ৪৫ টির ও অধিক বেসরকারী টিভি চ্যানেল রয়েছে। আরও চ্যানেল আসবে খুব শীঘ্রই। প্রতিটা চ্যানেলেই প্রয়োজন দক্ষ ভিডিও এডিটর। চিত্রগ্রাহক (ক্যামেরাম্যান) দের ধারন করা ভিডিও গুলো কেটেছেটে দৃশ্যের পর দৃশ্য সাজিয়ে অনুষ্ঠান ও সংবাদকে দর্শকদের দেখার উপযোগী করেতোলাই ভিডিও এডিটরের কাজ আর এসব অনুষ্ঠান ও সংবাদ ২৪ ঘন্টা প্রচার করে টিভিচ্যানেল।
প্রতিটা টিভি চ্যানেলে কতজন ভিডিও অ্যাডিটর রয়েছে সেটি জানলে হয়ত চাকুরী পাওয়ার সম্ভাবনাটা অনুধাবন করা সহজ হবে।
একটা চ্যানেলে তিন ধরনের ক্যাটাগরিতে ভিডিও এডিটর নেওয়া হয়
১.সিনিয়র ভিডিও এডিটর
২.ভিডিও এডিটর
৩.নতুন যারা আসতে চাই ফ্রেশার বা শিক্ষানবীশ সেখানে শিক্ষানবীশ নিয়োগ দেওয়া হয় ২০ জনের মত।
টেলিভিশন চ্যানেলের নতুন ভিডিও এডিটরদের বেতন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হয়। কিন্তু যারা বহুদিনের অভিজ্ঞ তাদের বেতন ৫০ হাজার – ১ লাখ টাকা পযন্ত হয়ে থাকে।
মুভি ইন্ডাস্ট্রি
মুভি এডিটিং খুবই জটিল এবং সৃষ্টিশীল পেশা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই ক্ষেত্রটিতে দক্ষতার চেয়ে সৃজনশীলতার মূল্য বেশি তাই এর পারিশ্রমিকের মূল্যও অনেক বেশি। বর্তমানে আমাদের দেশে চলচ্চিত্র এবং নাটক তৈরির হার অনেক বেড়ে গেছে আর সে জন্য প্রয়োজন পরছে প্রচুর পরিমানের ভিডিও ইডিটরদের।
মুভি এডিটিং এর জন্য বেশকিছু কাজ জানতে হয়। আর এগুলোর জন্য প্রয়োজন হয় আলাদা আলাদা অ্যাপ্লিকেশন। ফটো এডিটিং থেকে শুরু করে সাউন্ড এডিটিং, ভিডিও এডিটিং, 3D মডেলিং সবই এর অংশ।
অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজঃ
উপরের কয়েকটি ক্ষেএ সম্পর্কে পড়ে আশাকরি ইতিমধ্যে সবার কাছে ভিডিও ইডিটিং কাজের ক্ষেত্রগুলো সবার কাছে পরিস্কার হয়ে গেছে। যেকোন কাজের ক্ষেত্রগুলো যদি পযাপ্ত পরিমানে থাকে, তাহলে অনলাইনে মার্কেটপ্লেসগুলোতেও সেই কাজটির চাহিদা থাকবেই। অনলাইন মার্কেটপ্লেস ইল্যান্সে এ ধরনের কাজের চাহিদাগুলো জেনে নিতে পারেন, তাদের তৈরি গ্রাফ হতে। এ তথ্য গ্রাফ পাওয়ার লিংকঃ
www . elance.com / trends / skills _ central
এই গ্রাপটি তে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে অনলাইনে টোটাল ৪৬,৫৫৪ টি জব রয়েছে এখানে আর ওপেন জব রয়েছে ৭২৭ টি । একেকটি জবের বাজেট ছিল ১,০৩৮ ডলার করে । ভিডিও এডিটিং কাজের জন্য এই মার্কেটপ্লেস গুলুতে ঘণ্টায় ১৯ ডলার পে করা হয় তার মানে বাংলাদেশি টাকায় ১৫৬০ টাকা প্রতি ঘণ্টায় । আর ভিডিও এডিটিং এর কাজ প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে । সকল মার্কেটপ্লেসেই একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
উপরের সবগুলো আলোচনা থেকে বুঝতে পারা গেল কাজের চাহিদা সম্পর্কে। তারপর যেকোন কিছু শেখা শুরুর আগে জেনে নেওয়া দরকার, কোর্সটি শিখতে কতটুকু কষ্ট করতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, সেটি হচ্ছে, গ্রাফিক ডিজাইন কিংবা ওয়েবডিজাইন কিংবা এসইও সম্পর্কিত কাজের চাইতে অনেক সহজ এবং অনেক মজাদার। সেই সাথে শিখতে সময়ও লাগে অনেক কম।