ভারতের কর্ণাটকের প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে একদল উগ্র হিন্দুত্ববাদী তরুণের সামনে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি তোলা সাহসী শিক্ষার্থী মুসকান খানের প্রশংসায় যখন পঞ্চমুখ সারা বিশ্ব, তখন উল্টো তার বিরুদ্ধেই উসকানি দেওয়ার অভিযোগ তুললেন রাজ্যটির শিক্ষামন্ত্রী। তার অভিযোগ, মুসকানই নাকি ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া তরুণদের উসকে দিয়েছে। হিজাব বিতর্কে বেঙ্গালুরুর স্কুল-কলেজে ১৪৪ ধারা
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, কর্ণাটকের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বি সি নাগেশ গেরুয়া উত্তরীয় পরা তরুণদের পক্ষ নিয়ে বলেছেন, মেয়েটিকে ঘেরাও করার ইচ্ছা ছিল না তাদের (তরুণদের)। কিন্তু সে (মুসকান) যখন চিৎকার শুরু করলো… যে যখন ‘আল্লাহু আকবার’ বলে চিৎকার করছিল, তখন তার পাশে একজন শিক্ষার্থীও ছিল না।
মন্ত্রী অভিযোগ করেন, সে (মুসকান) কেন কলেজ ক্যাম্পাসে আল্লাহু আকবার বলে উসকানি দিলো? ক্যাম্পাসে আল্লাহু আকবার বা জয় শ্রীরাম বলতে তো আর উৎসাহিত করতে পারি না। তিনি বলেন, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। সরকার কোনো অপরাধীকেই ছাড়বে না।
মান্দ্যর প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে একা মুসকানের মুখোমুখি হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে রীতিমতো ঝড় তুলেছে। এর সঙ্গে ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হিজাব ইস্যুতে বিতর্ক ক্রমেই বাড়ছে। সে দিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে মুসকান দাবি করেন, ‘‘আমাকে দেখেই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া শুরু হয়। আমিও পাল্টা ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিতে থাকি।’’ তার দাবি, উপস্থিত গেরুয়া উত্তরীয় পরিহিতদের কয়েক জনকে তিনি চিনতে পেরেছিলেন। কারণ তারাও মুসকানের সহপাঠী। তবে বেশির ভাগই বহিরাগত।
মুসকান জানিয়েছেন, পড়াশোনা করাই তার অগ্রাধিকার। তার কথায়, ‘ওঁরা আমাদের পড়াশোনা করার অধিকারটাই ছিনিয়ে নিতে চায়, এক টুকরো কাপড়ের জন্য!’
মুসকান বলেন, ‘গত সপ্তাহ থেকে এটা শুরু হয়েছে। আমি বরাবরই বোরখা আর হিজাব পরতে অভ্যস্ত। ক্লাসে বোরখা খুলে হিজাব পরে নিই। হিজাব এখন যেন আমার অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। কলেজের প্রিন্সিপালও কোনও দিন কিছু বলেননি। বহিরাগতরা এটা শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রিন্সিপাল আমাদের বোরখা আনতে মানা করেছেন। কিন্তু হিজাবের দাবিতে আমাদের প্রতিবাদ জারি থাকবে।’ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের বাণিজ্য শাখার ওই ছাত্রী বলেছেন, ‘আমার হিন্দু বন্ধুরাও আমার সঙ্গে আছে।